ডায়েরি

" আমি একটা জিন্দা লাশ
কাটিস না রে জংলার বাঁশ
আমার লাইগা সাড়ে তিন হাত কবর খুঁড়িস না
আমি পিরিতের অনলে পোড়া
মরার পরে আমায় পুড়িস না...........
১৮ তলার দক্ষিণের ঘরটা বৃদ্ধার....আপন মনে পুরোনো মোবাইলে প্লে লিস্ট এগিয়ে চলছে...
ঠিক বৃদ্ধা নয়, বয়সটা যেন খাতা কলমেই বেড়েছে শুধু, আর চশমার পাওয়ারে। ইচ্ছেগুলো সেই কিশোর বয়সেই আটকে আছে। বার্ধক্য ঠিক ধরি ধরি করেও যেন ধরতে পারছেনা। চোখের মায়াতে এতটুকুও ভাটা পড়েনি, ঠোঁটের হাসিটা আজও যে কোন ডায়াবেটিক রোগীর জন্য খানিক বিপজ্জনকই রয়ে গেছে। তবু বয়স থেমে নেই।
কৈশর কেটেছে বহুক্রোশ দূরের সেই বাংলায়.... তখন থেকেই ইচ্ছা ইগলের পাখায় চেপে শুণ্যে, অনেক দূর পথ পাড়ি দেওয়ার। তিন দশকে কখনো দেশে ফেরার জন্য ঘুনাক্ষরেও মন টানেনি। আজ কেন জানি সব ফাঁকা ফাঁকা লাগে..... এত বছর পর।
এখানে সুখ আছে, সমৃদ্ধি আছে, বাহারী রঙ আছে। কিন্তু শান্তি নেই, রঙ গায়ে লাগে,মন ছুঁতে পারেনা। বহুদিন পর বোধ হল সেই বাংলার কথা,ওখানে রঙ গায়ে লাগেনা, মন রাঙায়।
দিন সাতেক পরের কথা
তল্পিতল্পা গুটিয়ে এই শুণ্যের হিসাব মিলিয়ে আবার পুরোনো সবুজ ঘনবসতি জ্যাম ভেজাল খাবার কোলাহলপূর্ণ ধুলাময় বাংলায় পাড়ি জমানো অনেকটাই নিশ্চিত। বাকি জীবনটা ওখানেই পার করার ভীষণ স্বাধ জেগেছে মনে।
ওখানে স্বস্তি মেলে অল্প দামে,ওখানে শান্তি মেলে বিনামূল্যে, ওখানে প্রাণ ফিরে পাওয়া যায় সহজেই, কিছুই নেই তবু কি যেন আছে। এত সমস্যা জর্জরিত হয়েও কিসের যেন এক মায়া এই বাংলার আছে। সেই মায়া ছাড়া জীবন সম্পূর্ন হয়না, হতে দেয়না,কই যেন একটা ফাঁক থেকেই যায় সে মায়া ছাড়া।
কোমল চেহারর বয়স্ক লোকটা বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বাড়িটা বিক্রয় করার জন্য। ঢাকায় মীরপুরে ছোট একটা সাজানো কুঠির তার। তার মতই প্রাণবন্ত সে বাসা। পাখপাখালির মেলা, সৌখিন বেতের দোলনা, ছোট রঙ্গিন বাগানের পাশে একটা দেশী মুরগীর ঘরা
বেশ শক্ত সামর্থ্য লোকটা এতবড় বাসায় একাই থাকতেন। শখ হয়েছে বাকি জীবন পাহাড়ে সমুদ্রে ঘুরে ঘুরে কাটাবেন। সৌখিনতার শেষ নেই। নতুন কিছু করার আগ্রহে তার এতটুকুও ভাটা পড়েনি আজও
এক দালাল ঠিক করেছে বেচবে বলে।শীগ্রই পাওয়া যাবে খরিদ্দার
এক কালীন সব পরিশোধ ও করতে রাজী।
এত বছরের মায়া ত্যাগ করতে বেশি কষ্ট হয়না তার। তবু প্রথম দিনের কিছু কথা মনে পড়ে, কিশোর বয়স বোধ হয় মানুষের আজীবনের চিন্তার খোরাক জোগায়, আফসোস ভালো লাগা সব কিছুর খনি যেন এই কৈশর।বাকি জীবনে অবসর মানেই কৈশর নিয়ে মেতে থাকা।
সব প্রায় গুছানো শেষ....
শেষ বিকেলটা রান্না ঘরের জানালা ধরে এক কাপ চা আর এক রাশ ধোঁয়া উড়িয়েই কেটে যায়.... এক ভিন্ন স্বাধের চা....
পরদিন ভোরবেলা রওনা হয়ে গেল সাময়িক এক গন্তব্যে, যাযাবর জীবনের শুরু। এ এক thrilling experience ই বটে
সকাল দশটায় এয়ার বাংলাদেশ এর একটা ফ্লাইট হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে অবতরণ করলো এক জোড়া খুদার্ত চোখ নিয়ে....
আহ্!! মাটিতে পা রাখতেই যে হাওয়াটা শাড়ির আঁচল এলোমেলো করে দিল
এই হাওয়া অমূল্য সম্পদ। এটা বাংলাদেশের এন্ডেমিক হাওয়া,বিশ্বের আর কোথাও নাই, নিমিষেই জীবন মন প্রাণ সব পরিপূর্ণ করে দিতে পারে এক আলিঙ্গনে
এয়ারপোর্ট থেকে সোজা নতুন বাড়ি।
ঢুকেই সে এক প্রশান্তি, চেনা গন্ধ, কেমন আপন আপন মায়া, কি যেন আছে আবার নাই, এক অন্যরকম অস্বস্তিকর ভাব হচ্ছে।
ঠিক বুঝে ওঠা কঠিন এর পিছনের কারণ।হতে পারে এতদিনের অভ্যাস, হতে পারে লম্বা জার্নি বিমানে এসব ভেবে বৃদ্ধা এগলো বাড়ির চারিপাশ টা একটু ঘুরে দেখতে
নারীসুলভ স্বভাব
বাড়ির ভিতর প্রবেশ করেই আগে পা চলেযাবে রান্না ঘর পানে
বাঙালী নারীদের এই মায়াময়ী স্বভাব বিশ্বের অন্য কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই,থাকলেও তা এত গভীর কিনা স্বন্দেহ থেকেই যাবে।
কেমন অগোছালো হয়ে আছে রান্নাঘর টা ইশশশ্...!!
তেমন কিছু নেই ও
এ কেমন চুলারে বাবা!!
এক কেটলি চুলার উপর
এক কাপ অর্ধপূর্ণ, এ্যাশ ট্রেতে তাজা ছাই, পাশে এলোমেলো দেখতে সাজানো এক ডায়েরী....
কৌতূহোলী মন... চার পাশটা একবার তাকিয়ে স্বগতোক্তি করে ওঠে বৃদ্ধা..... চেনা গন্ধ, কেমন যেন যায়গাটা, একদম আলাদা কি যেন আছে আবার নেই।
চারদিকটা দেখে চোখে লাগে ডায়েরী টা
হাতে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে যেয়েও দিলোনা, কৌতূহল... শিষ্টাচারের শিক্ষা আর যাই হোক বাঙ্গালিয়ানা তো মুছে ফেলতে পারেনা। অন্যের ডায়েরী হলেও একটিবার চোখ বুলানোর কৌতূহল চেপে রাখা গেলোনা।
ডায়েরী টা নামহীন।
কভারটা একটু ময়লা
তবে ভিতরের পৃষ্ঠাগুলো একদমই পরিষ্কার
প্রথম এক পৃষ্ঠা ফাঁকা
পরের পৃষ্ঠায় সবুজ রঙ এর কলমে লেখা " তুমি"
এই তুমি শব্দটিকে ধারণ করছে এক লাল কলমের হার্ট আকৃতির আঁচড়....
এরপর কয়েক পৃষ্ঠা ফাঁকা দিয়ে একটা তারিখ আর গোটা গোটা হাতে অগোছালো কিছু লেখা, খুব সুন্দর গোটা গোটা লেখা নয়, যথেষ্ঠ খারাপ হাতের অত্যন্ত নরম করে লেখা, প্রতিটি কালির আঁচড়ে আবেগ বিদ্যমান।
চশমা টা ঠিক করে চোখ বুলায় ডায়েরী তে
১৫/১২/২০১৬
আচ্ছা অন্যকিছু যে ভাবতেই ইচ্ছা করছেনা তার কি হবে???
এমন লাগছে কেন আমার???
এমন অস্থির তো লাগেনা সচরাচর।
আচ্ছা লাইট ব্রাউন কালার ড্রেসের মেয়েটার মধ্যে কি এমন আছে???
আচ্ছা ওর চুলগুলো কি হিমালয় চূড়ার আকাশের মত ছিল...??? যেখানে মেঘ ধরতে পারা যায়..???
কিন্তু ওখানে আকাশ কি এমন ঘন কালো...???
কালো রঙেও যে এত আলো থাকে তা তোমার চুল না দেখলে বোঝা হয়ে উঠতোনা কখনোই গো মেয়ে....
ওমন বারবার আড় চোখে তাকাচ্ছিলে কেন আমার দিকে বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে..??? হুম..???
আচ্ছা তুমি কি জন্য হাসছিলে ওভাবে আমাকে দেখে???
বুঝতে পেরেছিলে নাকি আমার নিজের ডিবেট বাদ দিয়ে তোমারটা দেখতে বসে গিয়েছিলাম...???
দিলে ছোট্ট একটা হাসি, কিন্তু নিলে সবচেয়েদামী জিনিসটা মুহুর্তেই.....
২৪/১২/১৬
আচ্ছা ওর সাথে যোগাযোগ করা কি ঠিক হবে??? কি ভাববে আমাকে??? আমিই বা নক দিয়ে কি বলবো...???
আচ্ছা আমি কি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি...???
না না। শুনেছি ভালোবাসা অনেক খারাপ।খুব কষ্ট দেয়।
মাঝের অনেকগুলো পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলা.... বোঝা যাচ্ছে অনেক যত্ন করে ছেঁড়া হয়েছে...
১/৩/১৭
আচ্ছা ও কি আমায় দেখতে পেয়েছিলো.????
আমি কিছু লিখতে পাচ্ছিনা আজ....
হাত কাঁপছে খুশিতে...
স্টেজ থেকে কি নিচে দেখা যায়??
তুমি দেখতে পেয়েছিলে আমাকে???
কে জানে পেয়েছো কি না
আজ আমাদের দ্বিতীয় দেখা তাই না...??
না না আমার দ্বিতীয়, তুমি দেখতে পেয়েছো কিনা জানিনা তো
চুল ওভাবে খোলা কেন রেখেছিলে..??
তোমার চুল বড্ড অবাধ্য, আমার কাছে এসে কি ছিনতাই করেছো জানো...?? জানবে, একদিন জানবে।
তবে সুখের শুণ্যতা উপহার দিয়েছে। তুমি এত চমৎকার গাও আগে বুঝিনি তো! কেমন একটা মোহ আছে তোমার গানে। জানো..?? আমি না খুবই খুশি খুবই!!! তুমি এত্ত সুন্দর বাপ রে!!!
২/৪/১৬
আচ্ছা আমি কি সত্যিই তোমার প্রেমে পড়ে গেছি...??
জানো??? সবাই না আমাকে পাগল বলে
আমার বন্ধুরাও
শুনলাম তুমিও নাকি বলো
জানো??? ওরা যখন বলে তখন আমার কিছু মনে হয়না, কিন্তু তুমি বলেছো শুনে খুব লজ্জা পাইছি। আমি কি সত্যি পাগল তোমার কাছে..???
সে যদি তোমার জন্য একটু পাগল হয়েই থাকি খুব কি রাগ করবে তুমি..???
১৩/৭/১৭
জানো এখন সময় কত???
গভীর রাত। বৃষ্টিভেজা রাত।
সময়টা স্বপ্নের মত, ঠিক স্বপ্নের মত।এত আপন ভাবো তুমি আমায়..?? এতটা!!! তোমার তোমার অভিমান তোমার হাসি তোমার ভালো লাগা এসব কিছু আমি!! ভাবতেও পারিনা। জানো..??? একটু আগে বৃষ্টির রাতের আবেগটুকুও তুমি আমাকে দিলে! আমি ফোনের এপারে কেমন বোবা হয়ে ছিলাম তুমি কি দেখতে পেয়েছিলে???
পাওনি তাই না..???
আচ্ছা তুমি কি দেখতে পাও তোমার ফোন কিভাবে মুহুর্তেই আমার হার্ট রেটের পরিবর্তন ঘটাও...???
তুমি কি খেয়াল করেছো আমার ভিতরে এন্ডোরফিন সিক্রেশন এর কারণ হয়ে উঠেছো তুমি...???
আচ্ছা তুমি কি জানো ফোনের ওপারে তোমার বলা প্রতিটা কথা প্রতিটা ম্যাসেজ পড়ে আমি তোমাকে কল্পনা করি..?? চোখ বুঁজে ছবি আঁকি কথাটা কিভাবে বললে তুমি.... তুমি কি বুঝতে পারো কতটা মুগ্ধ হই??? কতটা পাগল হই তোমার হাসি শুনেই..???
আচ্ছা তুমি কি আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারবে..???
তাহলে ব্লক দাও কেন ফেসবুকে...??
জানো তুমি যখন ঝগড়া করো তখন ফোনের এপারে আমি মুচকি হাসি তোমার কথা শুনে???
তুমি যখন হাসো তখন কানে ফোন ধরে থাকা হাতটা একটু ঢিলে হয়ে যায়..??? এসব তো আবার দেখা যায়না। প্রযুক্তির এই এক সমস্যা।সব ফাইল ট্রান্সফার হয়, শুধু আবেগটুকু ডিটেক্ট ও হয়না.....
২৫/৭/১৭
জানো??? ভাইয়া বলছে আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে দ্রুত প্রোপজ করতে বলছে। কিন্তু আমি তো ভীষণ ভয় পাচ্ছি। যদি তোমাকে হারাই..??? কিভাবে থাকবো...?? যদি এই বন্ধুত্ত্বটুকুও না থাকে..?? যদি তোমার গান আর শুনতে না পাই..??
ফোন কানে ধরে যদি আর না ঘুমাও তো তোমার নিঃশ্বাসের শব্দ আমাকে কে এনে দেবে বলতে পারো...?
কিন্তু ভাইয়া তো বললো প্রপোজ না করলে নাকি তোমাকে হারাতে হবে..???
কি যে করি....
এ কেমন উভয়সংকট
আচ্ছা তুমি কি বুঝতে পারোনা কতটা ভালোবাসি...???
জানো..??? সেদিন তো আমাদের গল্পগুলো শুনে ভাইয়া বললো তুমিও নাকি আমাকে অনেক ভালোবাসো অনেক কেয়ার করো, আর আমার মোটা বন্ধু ও বলছে। যে তুমি নাকি আমার প্রতি উইক, প্রপোজ করলেই এক্সেপ্ট করবা।সত্যি করবা তো..???
ধুরররর.... আমার তো সাহসই হচ্ছেনা। কিভাবে বলবো...???
পরের কয়েকটা পৃষ্ঠা ছেঁড়াও না আবার ঠিক ও না, যেন কেউ সিগারেটের আগুন দিয়ে পৃষ্ঠাভরে বহুনির্বাচনী প্রশ্নের বৃত্ত ভরাট করেছে। কিছুই বোঝা যায়না ঠিক।
এরপর কিছু এলোমেলো দাগ বিভিন্ন রঙের
আর তারিখ ছাড়া এলোমেলো কিছু লেখা।
আবছা আবছা কিছু মনে হয়েও হচ্ছেনা এই পর্যন্ত এসে
খুবই শিশুসুলভ কিছু লেখা
মাঝ বিকেল।
নাহ্ আর একটু পড়েই দেখা যাক।
২৪/৯/১৭
আচ্ছা সব এমন কেন হয়ে গেল...???
বলতে পারো...???
সত্যিই কি আমাকে ভালোবাসোনা তুমি...???
কেন রে...???
ভাইয়া বলে তুমি নাকি মুখ ফুটে বলতে পাচ্ছোনা যে ভালোবাসো, তুমি নাকি হারানোর ভয়ে স্বীকার করতে চাচ্ছোনা যে আমাকে ভালোবাসো....
আমি হারাবোনা রে
কিন্তু ওরা তো বোঝেনা যে তুমি আমাকে ঘৃণা করো। আমি তো জানি আমাকে তুমি শুধুই বন্ধু ভাবো।
জানো...??? সেদিন রেস্টুরেন্টে যখন জোর করে ভালোবাসি
বলাইছি তখন কি যে আনন্দ হচ্ছিল!!! বুঝতে পেরেছিলে..??? কিন্তু আমিই বুঝিনি এটা জোর করে হওয়ার জিনিস না।
তুমি কি জানো..??? তোমার সাথে ফোন নিয়ে কাড়াকাড়ি করার ছলে তোমার অর্ধেক খাওয়া কোল্ড ড্রিংক্সের বোতলের সাথে আমারটা এক্সচেঞ্জ করেছিলাম??? হিহিহি
ঐ কাঁচের বোতলকে কখনো জিজ্ঞেস করে দেখো কতটা ভালোবাসি তোমাকে,ও জানে।
আচ্ছা তুমি যে বললে একটু ভালোবাসো তার মানে কি গো...?? ভাইয়া বলছে একটু মানেই সব। আমার বন্ধু তো আমার উপর অনেক রেগে যায়। কিন্তু আমি তো তোমাকে ছাড়তে পারবোনা যতই আমাকে ইগ্নোর করো.... আপনজনের কাছে কেউ ছোট হয়না যে। তুমি তো আমার আপনজনই।
জানো আজকে এতটা কষ্ট পাইছি যখন শুনলাম তুমি তোমার কলেজের আর এক ছেলের সাথেও অনেক ক্লোজ। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাইছি কখন জানো...?? যখন ও বললো বৃষ্টি হলে নাকি তুমি ওকেও ফোন দাও। ওকে নাকি তুমি ভালোবাসো। জানো.. আমি বিশ্বাস করিনি।
আমার বন্ধু ছিল আমার সাথে। বন্ধু বলেছে তোমাকে ভুলে যেতে। অথচ জানো... ঐ ছেলে কত নোংরা ভাষায় তোমার সম্পর্কে বলছিল..?? ছিঃ!! সে নাকি তোমার বন্ধু...?? আমার যে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রে। আমি যে তোমাকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারিনা আর পারবোওনা।
তুমি কি সত্যিই তাহলে আমার হবেনা...???
কি দিন ছিল! হাহ! কি দিন এলো! তোমার নিশ্বাস শুনে ঘুমানো, তোমাকে ঘুমাতে না দেওয়া, তোমার গান, তোমার গল্প এসব ছাড়াই দিন চলে যাচ্ছে। কিভাবে যাচ্ছে তা শুধু আমিই জানি। হাসতে হয় তাই হাসি
আর দাবি করতেও সাহস পাইনা, ভালোবাসি বলতেও দ্বিধা হয় পাছে যেটুক তাও কালে ভদ্রে যোগাযোগ হয় সেটাও না হারায়। তবু ভালোবাসি.....
এগুলো বোধ হয় কখনোই জানা হয়ে উঠবেনা তোমার
আমার কত বিকেলজুড়ে শুধু তুমি আছো, কত নির্ঘুম রাত তোমার ভালোবাসায় একা একা পার হয়ে যাচ্ছে, সবকিছুর পর ও বলতেই হয় ভালো আছি। হাহা। কি আজব! যা ভয় পেয়েছিলাম তাই দেখি হয়ে গেল
হারাতেই বসেছি তোমাকে
ভালোবাসি বলাটা যে এতবড় অপরাধ আগে বুঝিনি।
জানো...??? আজ বিকেলে যখন তুমি রিক্সায় আমার পাশে বসে ছিলে আমার কি মনে হচ্ছিল..???
আচ্ছা একটাবার যদি ভাবি তুমি আমার
একটাবার যদি হাতটা ধরি শক্ত করে
খুব কি অপরাধ হবে??? খুব???
একটাবার যদি মুখ ফুটে বলতে " ফুয়াদ, ভালোবাসি "
বা একটা টেক্সট যদি করতে
" আমার হাসিটা শুধু তোমার "
শুধু একটাবার।
যাক তবু কি যে সুখ লাগে যতক্ষণ তুমি পাশে থাকো.....
দিনশেষে তোমার অভিমানটাই বোধ হয়ে জিতে যাবে
আমি বোধ হয় হেরেই যাবো....
তবু সময়টা স্বপ্নের মতই ছিল রিক্সায় তোমার পাশে
আহ্ আফসোস সত্যিই যদি পথটা শেষ না হতো......
পরের পৃষ্ঠাটা আংশিক পূড়ে যাওয়া, পাশে একটা প্রায় তিন চতুর্থাংশ ছেঁড়া পোড়া পৃষ্ঠা পড়ে আছে আর ঠিক তার পাশেই কেটলির নিচে চুলায় জমানো কিছু পোড়া ছাই.........
এক কেটলি চুলার উপর
এক কাপ অর্ধপূর্ণ, এ্যাশ ট্রেতে তাজা ছাই, পাশে এলোমেলো দেখতে সাজানো এক ডায়েরী....
ডায়েরিটা বন্ধ করে অনেকক্ষণ জানালা দিয়ে এক ঠায় বাইরের আকাশ দেখে বৃদ্ধা, সারি করে কাকেরা ঘরে ফিরছে। ঢাকা শহরে কাকই টিয়া কাকই শালিক। সাদা মেঘ নীল আকাশের গায়ে কি সব এঁকে চলে যায় আপন গন্তব্যে.....
আজ বহুদিন পর ধুলো পড়ে যাওয়া ভায়োলিন টা বাজাতে ইচ্ছে করে খুব..... রবীন্দ্র সংগীত মনে ধরছে আজ ' সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা।
সেই স্মৃতিটুকু কভু ক্ষণে ক্ষণে যেন জাগে মনে, ভুলো না, ভূলোনা ভূলোনা
সেদিন বাতাসে ছিল তুমি জানো আমারই মনের প্রলাপ জড়ানো আকাশে আকাশে......

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আহবান

চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছো......

ফরেস্ট গ্রিন